ব্রেকিংঃ

অবশেষে ১২ শিক্ষার্থী গ্রেপ্তার, রিমান্ডে

অবশেষে সেই ১২ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। রাজধানীর তেজগাঁওয়ের তেজকুনীপাড়া এলাকা থেকে ১২ শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে বলে স্বীকার করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় দায়ের করা দু’টি মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
সোমবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) মাসুদুর রহমান জানান, রবিবার ১২ জন শিবির কর্মীকে (সবাই শিক্ষার্থী) গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে নিরাপদ সড়কের আন্দোলন চলাকালে গুজব সৃষ্টিকারীদের অন্যতম মূল হোতা তারেক আজিজসহ বাকিদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার তাদের আদালতে পাঠিয়ে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। এদের মধ্যে তারেকের ৪ দিন ও অন্যদের ২ দিন করে রিমান্ডে নেয়।
তবে ১২ শিক্ষার্থীর পরিবার গত রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে অভিযোগ করেন, গত ৫ সেপ্টেম্বর ডিবি পুলিশ তাদের আটক করে। মহানগর গোয়েন্দা (উত্তর) পুলিশের সূত্রে জানা গেছে, তারেক আজিজের বিরুদ্ধে আইসিটি অ্যাক্ট এবং বাকিদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাজে বাধা ও হামলার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় এ দু’টি মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেপ্তার ছাত্ররা হলেন- তারেক আজিজ, তারেক, জাহাঙ্গীর আলম, মোজাহিদুল ইসলাম, আল আমিন, জহিরুল ইসলাম, বোরহান উদ্দিন, ইফতেখার আলম, মেহেদী হাসান রাজিব, মো. মাহফুজ, সাইফুল্লাহ ও রায়হানুল আবেদিন।
পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের কাছ থেকে বিভিন্ন স্কুল কলেজের মনোগ্রামসহ ১২ সেট ইউনিফর্ম, ১৩টি ফিতাসহ আইডি কার্ড (যদিও গ্রেপ্তার ছাত্ররা কেউই ওইসব স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী নয়), হ্যান্ডমাইক, ম্যাগনিফাইয়িং গ্লাস, হাতুড়ি, স্ক্রু ড্রাইভার, তিনটি ল্যাপটপ, ইসলামি ছাত্র শিবিরের কর্ম পদ্ধতির বিভিন্ন ফরম, শিবিরের কিশোর কণ্ঠ ম্যাগাজিনসহ বিভিন্ন ইসলামী বই, বিভিন্ন কার্যক্রমের বিষয়ে লেখা ডায়েরি ও ফেসবুকে পোস্ট করা বিভিন্ন ভিডিওসহ ছবি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃতদের বরাত দিয়ে মাসুদুর রহমান বলেন, ‘তারা গত ২৯ আগস্ট শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও নিরাপদ সড়কের আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রভাবিত করতে ফেসবুক ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত বিভিন্ন উসকানিমূলক লেখা, পোস্ট ও ভিডিও’র মাধ্যমে গুজব ছড়ায়।
মাসুদুর রহমান বলেন, ‘গত ৬ আগস্ট বেলা পৌনে ১২টার দিকে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয় ও অন্যান্য স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যলয়ের বহিরাগত ছাত্ররা ৪০০ থেকে ৫০০ জন একত্রিত হয়ে আহসানউল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে সরকারবিরোধী বিভিন্ন উত্তেজনাকর স্লোগান দিয়ে রাস্তায় নেমে আসে। উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা রাস্তা বন্ধ করে ও সরকারবিরোধী বিভিন্ন ধরনের স্লোগান দিতে থাকে। উচ্ছৃঙ্খল ছাত্ররা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ করে।’
তিনি বলেন, ‘ছাত্রদের ইট পাটকেলের আঘাতে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার পিআই আবু হাজ্জাজ, এসআই ইমাম  হোসেন, এএসআই আজাদ, এএসআই ইব্রাহিমসহ কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। ছাত্র আন্দোলনকে ভিন্নখাতে নেয়া ব্যক্তিদের অন্যতম মূল হোতা তারেক আজিজ ফেসবুক টাইম লাইনের মাধ্যমে কার্যক্রম পরিচালিত করতো।’
রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার শিক্ষার্থীদের সাত দিনের পুলিশ রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়। আদালত তারেক আজিজের ৪ দিনের এবং অন্যদের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
উল্লেখ্য, গত ৫ সেপ্টেম্বর নিখোঁজের তিন দিন পরও সন্তানদের খোঁজ না পেয়ে রবিবার দুপুরে ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশের (ক্র্যাব) কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন নিখোঁজ ১২ শিক্ষার্থীর পরিবারের সদস্যরা। তাদের দাবি- রাজধানীর মহাখালী ও তেজগাঁও এলাকা থেকে গত বুধবার অভিযান চালিয়ে পুলিশ ১২ শিক্ষার্থীকে ধরে নিয়ে যায়। সংশ্লিষ্ট সূত্রের দাবি, ওই দিন এই ১২ শিক্ষার্থীর সঙ্গে আরও কয়েকজনকে আটক করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে আনা হয়েছিল। তবে ১২ জনকে রেখে বাকিদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।