ভোলা সদর উপজেলার পূর্ব ইলিশা ইউনিয়নে জেলেদের জন্য মা ইলিশ রক্ষা অভিযান উপলক্ষে বরাদ্দকৃত পুনর্বাসনের চাল আত্মসাতের অভিযোগে স্থানীয় জেলেরা গত কয়েকদিন আগে ওই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাসনাইন আহমেদ হাসান মিয়ার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
এ অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে শনিবার বেলা ১১টার দিকে ভোলা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চেয়ারম্যান হাসনাইন আহমেদ। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পূর্ব-ইলিশা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হোসেন শহিদ সরোয়ার্দি।
এ সময় অভিযুক্ত চেয়ারম্যান হাসনাইন আহমেদ বলেন, ভোলার সদর উপজেলার পূর্ব-ইলিশা ইউনিয়নের মো. ফারুক হোসেন বেপারী মেঘনা নদীতে অবৈধ পারাপার, ডুবোচর দখল করে অবৈধ জাল দিয়ে মাছ শিকার, জলদস্যুতা, মাদকের চালান পারাপার করে সাধারণ জেলে নৌকার মাঝি থেকে কয়েক কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। তাঁর এ সকল অন্যায়ের প্রতিবাদ করায় টাকার প্রভাবে সে আমার ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার উচিৎ তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার করা।
তিনি আরও বলেন, ফারুক বেপারি তাঁর এলাকায় কয়েকটি জুয়ার আসর চালায়। আমি ওইসব জুয়ার আসর থেকে কয়েকজন জুয়ারীকে পুলিশ দিয়ে ধরিয়ে দিয়েছি। বর্তমানে মেঘনা নদীতে মা-ইলিশের অভিযান চলছে। ফারুক বেপারীর জেলেরা নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নদীতে মাছ ধরছে। এ মাছ ধরা বন্ধে আমি তার বাঁধা হয়ে দাঁড়াই। এসব কারণে ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের বহিরাগত জেলেদের জমায়েত করে আমার বিরুদ্ধে চাল চুরির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করিয়েছে।
ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হোসেন শহিদ সরোয়ার্দি বলেন, মো. ফারুক বেপারী সরকারি (ইলিশা ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাট) ঘাটকে উপেক্ষা করে পাশে ড্রাম দিয়ে নিজে ঘাট সৃষ্টি করে ইলিশা-মজুচৌধুরীর হাট নৌ-পথে অবৈধ ট্রলার ও স্পিডবোট চালাচ্ছে। এসব ট্রলার ও স্পিডবোটে সে মাদক বহন করছে। কয়েকমাস আগে পরাণগঞ্জ বাজারে মাদকসহ ফারুক বেপারীকে লোকজন গণ-ধোলাই দেয়। উত্তাল মেঘনায় সে অবৈধ নৌযান চালিয়ে মানুষের জীবন নিয়ে খেলছে।
এ ব্যাপারে ফারুক হোসেন বেপারী তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তিনি পূর্ব-ইলিশা ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সভাপতি ও ব্যবসায়ী। তিনি ইলিশ মাছের ব্যবসা করেন। ইলিশার ভাংতির খাল মাছ ঘাটের আড়ৎদার। তিনি জেলা পরিষদ থেকে ইলিশা ফেরিঘাট ইজারা এনে চালাচ্ছিলেন। তাঁর ঘাটের পাশে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) লঞ্চঘাট ও ফেরিঘাট।
ওই ঘাট দুটি ৩৩ লাখ টাকায় ডাক হতো। সেই ঘাট দুটি পূর্ব-ইলিশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাসনাইন আহমেদ, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. মিঞা সিরাজ ও সাধারণ সম্পাদক হোসেন শহিদ সরোয়ার্দি যৌথভাবে এক কোটি ২৮ লাখ টাকায় ডাক এনেছেন। তাঁরা জোর করে ফারুক বেপারীর ঘাট তুলে দিয়েছে। তারা ইলিশা ফেরিঘাট ও লঞ্চঘাটে ইজারা আদায়ের নামে চাঁদাবাজি করছেন। ৫ টাকার স্থলে ৫০০ টাকা আদায় করছেন। তাদের চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, হাসনাইন আহমেদ চেয়ারম্যান হওয়ার পর থেকে কাবিখা, কাবিটা, ৪০দিনের কর্মসূচী, এলজিএসপি, মৎস্য ভিজিএফসহ গরীব মানুষের সকল বরাদ্দে ভাগ বসাচ্ছে। জেলেরা চাল না পেয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করার দোষ আমার ওপর চাপানো হচ্ছে। কিন্তু ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাসনাইন আহমেদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই আমাকে জলদস্যু বানানো হয়। ইউনিয়নের মানুষ এদের নির্যাতনে দিশেহারা।
সম্পাদক ও প্রকাশকঃ এম রহমান রুবেল