ব্রেকিংঃ

এইডস মৃত্যু নয় একটিও আর, বৈষম্যহীন পৃথিবী গড়বো সবাই, এই আমাদের অঙ্গীকার’

জনতার বাণী ডেক্স।।
বিশ্ব এইডস দিবস আজ শনিবার। প্রতিবারের মতো এবারও বাংলাদেশে দিবসটি পালন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বছর বিশ্ব এইডস দিবসের প্রতিপাদ্য হল ‘এইচআইভি পরীক্ষা করুন; নিজেকে জানুন’। এইডস-এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব সম্প্রদায় ১৯৮৮ সাল থেকে বিশ্ব এইডস দিবস পালন করে আসছে। ইউএনএইডস এর তথ্যমতে বর্তমানে বিশ্বে প্রায় ৩৪ মিলিয়ন মানুষ এইডস-এ আক্রান্ত এবং এ পর্যন্ত প্রায় ৩৫ মিলিয়ন মানুষ এ মরণঘাতি রোগে মৃত্যুবরণ করেছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। বাণীতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশের আপামর জনসাধারণের সর্বজনীন স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে তাঁর সরকার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। তিনি এ প্রতিশ্রুতিসমূহ বাস্তবায়নে সরকারি, বেসরকারি ও উন্নয়ন সহযোগীসহ সকলকে একযোগে কাজ করারও আহবান জানান। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো বাংলাদেশেও শনিবার ‘বিশ্ব এইডস দিবস – ২০১৮’ পালিত হচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘এইচআইভি পরীক্ষা করুন; নিজেকে জানুন’ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে তিনি মনে করেন। শেখ হাসিনা এ দিবস পালনের জন্য ‘সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক অভিনন্দন জানান। তিনি উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ সহ¯্রাব্দ লক্ষ্যমাত্রার (এমডিজি) অনেকগুলো সূচক অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে, যার মধ্যে অন্যতম এইচআইভি সংশ্লিষ্ট লক্ষ্য-৬। বাংলাদেশ সরকার টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) এইচআইভি/এইডস বিষয়ক লক্ষ্য অর্থাৎ ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে এইডস রোগ নির্মূল করার জন্য জাতিসংঘের নিকট প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শেখ হাসিনা বলেন, ২০১৫ সালে অনুষ্ঠিত ‘দ্য গ্লোবাল ফান্ডের ৫ম রিপ্লেনিশমেন্ট কনফারেন্সে’ আমরা এই প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন,এইচআইভি প্রতিরোধের সকল কার্যক্রম সফল করার লক্ষ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধি, নিয়ন্ত্রিত জীবনব্যবস্থা, মাদক বর্জন, নৈতিকতার উন্নয়ন, ধর্মীয় অনুশাসন এবং আক্রান্তদের প্রতি বৈষম্যহীনতা সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন। পাশাপাশি ‘আমাদের চলৎ কার্যক্রমসমূহ গুণগত মানোন্নয়নের মাধ্যমে অব্যাহত রাখতে হবে’ বলে তিনি জানান। শেখ হাসিনা সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায়, স্বাস্থ্যখাতে রূপকল্প ২০২১ ও ২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তোলার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে ‘বিশ্ব এইডস দিবস-২০১৮’ উপলক্ষে গৃহীত সকল কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন। অন্যদিকে, এইডস দিবস উপলক্ষে এক বাণীতে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এইডস প্রতিরোধ ও নির্মূলে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও উন্নয়ন সহযোগীদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। এইডস একটি মরণব্যাধি-এ কথা উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশে অদ্যাবধি সাধারণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এইচআইভি সংক্রমণের হার তুলনামূলক কম হলেও ভৌগোলিক অবস্থান, অসচেতনতা, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর অনিয়ন্ত্রিত আচরণ ও ভ্রান্ত ধারণার জন্য এইডসের ঝুঁকি এখনো বিদ্যমান। তাই প্রতিকারের পাশাপাশি এইডস প্রতিরোধে সচেতনতা সৃষ্টি, কুসংস্কার দূরীকরণ ও মানুষের আচরণ পরিবর্তনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ আবশ্যক। রাষ্ট্রপতি উল্লেখ করেন, এইডস নিয়ে মানুষের মাঝে এক ধরনের ভীতি ও লোকলজ্জা কাজ করে,যে কারণে এখনও বহু মানুষ তাদের নিজেদের অবস্থা তথা এইচআইভি/এইডস সংক্রমণের তথ্য জানায় না। বাংলাদেশেও সম্ভাব্য এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যককে এখনো চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি উল্লেখ করে অবিদুল হামিদ বলেন,এ প্রেক্ষাপটে এ বছর বিশ্ব এইডস দিবসের প্রতিপাদ্য ‘এইচআইভি পরীক্ষা করুন; নিজেকে জানুন’ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ও প্রাসঙ্গিক হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। রাষ্ট্রপতি বলেন,বর্তমানে এইডসের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকলেও মরণঘাতি এ রোগের কোনো প্রতিষেধক এখনও আবিষ্কার হয়নি। এইডসের প্রচলিত চিকিৎসা পদ্ধতি অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং আমৃত্যু এ চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয়। তাই এইডস রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সহজলভ্য এবং মানসম্পন্ন চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন,সরকার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে ২০১২ সাল থেকে এইডস আক্রান্তদের বিনামূল্যে ওষুধ ও সামাজিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করছে। বর্তমানে এই কর্মসূচির মাধ্যমে দেশব্যাপী ২৩টি জেলায় এইচআইভি পরীক্ষা ও চিকিৎসা কার্যক্রম সম্প্রসারণ করা হয়েছে।

দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।