ব্রেকিংঃ

ভোলার খালপাড়ে মরিচ-হলুদের গুঁড়ায় কাপড়ের রং মিশিয়ে তৈরি হয় মসলা,ভোক্তা নীরব ভূমিকায়।।

মোঃ বেল্লাল নাফিজ।।রমজান মাস সহ আমাদের প্রতিটি বাড়িতেই এই মশলাটি বেশি মসলার ব্যবহার হয়ে থাকে। তাই অন্যান্য পণ্যের পাশাপাশি মসলার বাজারেও থাকে চড়া দাম। এর সুযোগ নিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী তৈরি করছে ভেজাল মসলা। এই সব ভেজাল মশলা ভোলা সদর  বোরহানউদ্দিন, দৌলতখা,লালমোহন, চরফ্যাশন সহ বিভিন্ন বাজারে ছড়িয়ে পড়ছে।

জানা যায়, শনিবার (১৯শে অক্টোবর) সন্ধ্যা ৭টার দিকে ভোলার খালপাড় আকাশের সেলুনের দোকানের উত্তর পার্শ্বে অবস্থিত দোকান মালিক মাকসুদের ছোট্ট ভাই হলুদ মরিচে বিষাক্ত রং মিক্সচার করার সময় ভোলার স্থানীয় এক সাংবাদিকের ক্যামেরায় ধরা পড়ে। পরে ওই সাংবাদিক ভোক্তা অধিকার ভোলা কে বিষয়টি একাধিকবার জানালেও তারা কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি । পরে দোকানদার মাকসুদ ও তার ছোট্র ভাই দোকানের শাটার নামিয়ে আত্মগোপনে চলে যান৷ এবিষয়ে অভিযুক্ত দোকান মালিক মাকসুদের বড় ভাই মোহাম্মদ মামুন দৈনিক আজকের ভোলাকে জানান, খবর পেয়ে দোকানে এসে ঘটনার সম্পর্কে জেনেছি এবং ভিডিওটি দেখেছি। আমরা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় দোকানে তেমন সময় দিতে পারিনি ফলে আমার ছোট্র ভাই এই কাজ করেছে, যেটা আমাদের জানার বাহিরে। এটা অন্যায়, তবে আর এধরনের কাজ হবে না। আমরা এই অকাঙ্খিত ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করছি।

স্থানীয় একাধিক ভোক্তা ঘটনা স্থলে জানান, তারা প্রকাশ্যে করাতকলের কাঠের মিহি গুঁড়ার সঙ্গে রং, মরিচ, হলুদ মিশিয়ে আমাদের খাওয়াচ্ছে। এবিষয়ে ভোক্তাঅধিকার ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ম্যানেজ করেই তারা এসকল অসাধু ব্যবসা পরিচালনা করছেন বলে জানান তারা।

বাজার ঘুরে দেখা যায়,‘ ভেজালমুক্ত প্রতি কেজি হলুদ পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা দরে। যা খুচরা বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা । সেখানে ভেজাল হলুদের গুঁড়া পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা দরে। যা খুরচা বিক্রি হচ্ছে ১৬০-১৭০ টাকা। অপরদিকে ভেজালমুক্ত প্রতি কেজি মরিচের গুঁড়া পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ টাকা ধরে। যা খুরচা বিক্রি হচ্ছে ২২০টাকা। আর ভেজাল মরিচের গুঁড়া বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১২০ টাকা। দামে কম হওয়ায় সাধারন ক্রেতারা দেদারসে এসব ভেজাল গুঁড়া কিনছেন। এছাড়াও সমগ্র ভোলা জেলায় এখান থেকে অনেক খুচরা ব্যবসায়ীরা পাইকারি কিনে গ্রাম-গঞ্জের দোকানে খুচরা বিক্রি করেন।

ভোলা নাগরিক অধিকার ফোরামের সম্পাদক এ্যাডভোকেট শাহাদাত হোসেন শাহীন বলেন, দীর্ঘদিন ভোলায় অসাধু ব্যবসায়ীরা করাতকলের কাঠের মিহি গুঁড়ার সঙ্গে রং, মরিচ, হলুদ বিষাক্ত রং মিশিয়ে তা বাজারজাত করে ভোলার মানুষের সাথে প্রতারণা করে আসছে। নাগরিক অধিকার ফোরাম তা তীব্র প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। এবং ভোলা ভোক্তা অধিকার সময়োপযোগী ব্যবস্থা না নেওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

ঢাকা পিজি হাসপাতালের ডাঃ সাদ্দাম হোসেন খান বলেন, রাসায়নিক দ্রব্যের জীবাণু থেকে মানবদেহে ক্যান্সার,কিডনি, লিভারসহ কমপক্ষে ৫০ ধরনের মারাত্মক রোগ ছড়াতে পারে। মানবদেহে সাইপারমেথরিনের সহনীয় মাত্রা ০.০১ পিপিএম হলেও বাজারে বিক্রি হওয়া মসলায় পাওয়া গেছে গড়ে ০.৭৩ পিপিএম। এ ছাড়া ডায়াজিননের সহনীয় মাত্রা ০.০১ পিপিএম হলেও বাজারজাত করা বিভিন্ন মসলায় এর পরিমাণ পাওয়া গেছে ০.১৯ পিপিএম। প্রতিনিয়ত ভোক্তার শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে চলেছে হলুদ মরিচ ও মসলায় মেশানে এসব রাসায়নিক। মরিচে মেশানো হচ্ছে আলফাটক্সিন নামের এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া। এই মিশ্রণও মানবদেহের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।

এবিষয়ে ভোক্তা অধিকার ভোলার এডিসি জানান, ঘটনা শুনে খবর নিয়েছি অভিযুক্ত ব্যবসায়ী আত্মগোপনে রয়েছেন। তাই আগামীকাল বিষয়টি নিয়ে আমরা কাজ করবো।

দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।