ভোলায় বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্বেও স্পীডবোট চালাতে পারছেন না মালিকপক্ষ।
স্টাফ রিপোটার।।ভোলায় স্পিডবোট মালিকদের বৈধ কাগজপত্র থাকা সত্বেও প্রকৃত স্পীডবোট মালিকেরা তাদের পছনন্দের বৈধ ড্রাইভার দিয়ে বোট চারাতে পারছেন না স্পীডবোট মালিকরা।এদিকে অধিকাংশ স্পীডবোট ও ড্রাইভারদের কোন কাগজপত্র না থাকা সত্বেও তারা নদীতে বোট চালিয়ে বেড়াচ্ছেন অপ্রাপ্তদের দিয়ে একটি অসৎ ব্যক্তি।
ভোলা-বরিশাল নৌ রুটে শতাধিক স্পিডবোট চলাচল করছে, যেগুলোর মধ্যে অধিকাংশই ফিটনেসবিহীন, নিরাপত্তা সরঞ্জামহীন এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক ও অদক্ষ চালকদের দ্বারা পরিচালিত। এই কারণে প্রায়ই ঘটে ছোট-বড় দুর্ঘটনা, যার মধ্যে প্রাণহানির ঘটনাও রয়েছে।
গত ৫ ডিসেম্বর একটি দুর্ঘটনায় চালকসহ চারজন নিহত হন এবং আরো এক ব্যক্তি নিখোঁজ হয়েছেন। এই ঘটনায় প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে।
বিআইডাব্লিউটিএ ও জেলা প্রশাসন যৌথভাবে পাঁচ দিনের জন্য ¯স্পীডবোট চলাচল বন্ধ রেখেছিল। এর আগে ২০১৬ সালে রাতে দুটি স্পীডবোটের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের এক শিক্ষক ও তার সন্তান নিহত হন।
এ দুটি দুর্ঘটনাতেই চালকদের ভুল ছিল বলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন। ২০১৬ সালের দুর্ঘটনার পর রাতের বেলা স্পীডবোট চলাচল বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন এবং যাত্রীদের জন্য লাইফ জ্যাকেট পরা বাধ্যতামূলক করা হয়।
তবে প্রথম কিছুদিন এই নিয়মটি মানা হলেও পরে তা ভাঙতে শুরু করে স্পীডবোট মালিকরা। সর্বশেষ, ৫ ডিসেম্বর দুর্ঘটনায় পাঁচজন নিহত হওয়ার পর প্রশাসন আবারও ¯স্পীডবোট চলাচল বন্ধ করে দেয়। তবে ১১ ডিসেম্বর থেকে নতুন নিয়মে বৈধ কাগজপত্রসহ স্পীডবোট চলাচল শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৫ ডিসেম্বর দুপুরে ভোলা সদর উপজেলার ভেদুরিয়া লঞ্চঘাট থেকে ১০ জন যাত্রী নিয়ে বরিশালের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায় স্পীডবোটটি।
তবে বোটের চালক ছিলেন অপ্রাপ্তবয়স্ক মো. আলামিন (১৮), যিনি স্থানীয়দের মতে ১৬ থেকে ১৭ বছর বয়সী। বোটটি চলার সময় একটি বালু বোঝাই বাল্কহেডের সঙ্গে সংঘর্ষে পড়ে উল্টে যায়। এতে চালকসহ চারজন নদীতে পড়ে যান, যার মধ্যে তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তবে এক যাত্রী এখনও নিখোঁজ রয়েছেন।
ভোলা-বরিশাল নৌ-রুটে প্রায় ৬০-৭০টি স্পীডডবোট চলাচল করে, যার মধ্যে ৪০-৪২টি বৈধ রুট পারমিট পেয়ে চলাচল করছে।
তবে বেশিরভাগ সময় সনদধারী চালকরা ¯স্পীডবোট চালান না, কারণ তাদের বেতন খুবই কম এবং নিয়মিত সিরিয়াল পাওয়া যায় না। এর ফলে অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকরা কাজ করছেন। স্থানীয় যাত্রীরা জানান, সময় বাঁচাতে তারা স্পীবোট ব্যবহার করেন, কিন্তু একেবারেই নিরাপদ পরিবেশ পাওয়া যায় না। অধিকাংশ স্পীডবোট চালক অপ্রাপ্তবয়স্ক এবং তাদের কোনো প্রশিক্ষণ নেই।
স্পীডবোট মালিকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা প্রায়ই রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে সিরিয়াল পাচ্ছেন না এবং এটি তাদের জন্য লাভজনক নয়। ৫ ডিসেম্বরের দুর্ঘটনার পর বিআইডব্লিউটিএ এবং জেলা প্রশাসন নতুন নিয়মে ¯স্পীডবোট চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। তবে কত দিন এই নিয়মটি কার্যকর থাকবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে মালিকদের মধ্যে।
বিআইডাব্লিউটিএর ভোলা বন্দরের সহকারী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘এ ঘটনার পর আমরা কঠোর অবস্থানে রয়েছি। কোনো অবৈধ স্পীডবোট চলতে দেয়া হবে না এবং অপ্রাপ্তবয়স্ক চালকদের দিয়ে স্পীডবোট চালানো যাবে না।’ তিনি আরো জানান, কিছুদিনের মধ্যে সব কিছু নিয়মের মধ্যে চলে আসবে।