ব্রেকিংঃ

সেনাবাহিনীর হাত-পা বেঁধে রাখা হয়েছে : বিএনপি

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সেনাবাহিনীকে মাঠে নামিয়ে তাদের হাত-পা বেঁধে রেখেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার। তাদেরকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেয়া হচ্ছে না। আর এগুলো সবই হচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর ইশারায় এবং সিইসির তত্ত্বাবধানে।

শুক্রবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী ক্যাডাররা গতকাল দেশের বিভিন্ন স্থানে ধানের শীষের প্রার্থীদের মিছিলে বাধা দিয়েছে।

‘তারা বিএনপির নির্বাচনী এজেন্ট, কর্মী ও সমর্থকদের এলাকাছাড়া করেছেন। আওয়ামী সন্ত্রাসীদের গ্রামে-গ্রামে সশস্ত্র মহড়া চলছে। সারাদেশে এখনও ভীতিকর অবস্থা বিদ্যমান।’

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে বিএনপির এ নেতা বলেন, অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী আবারও বলেছেন-পরাজয় বুঝতে পেরে নাশকতার পরিকল্পনায় বিএনপি। সর্বজনবিদিত যে, আওয়ামী লীগ এমন দল যেটি একটি উন্নতমানের মিথ্যা প্রডাকশন কেন্দ্র।

তিনি বলেন, জেলায় জেলায় বেপরোয়া গ্রেফতার অভিযানে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়িছাড়া করা হচ্ছে। আর আপনি বলছেন-বিএনপি নাশকতা করছে। নাশকতাকারীদের ট্রেনিং সেন্টার তো আওয়ামী লীগেই বিদ্যমান। সন্ত্রাসের অভয়ারণ্য আওয়ামী লীগ ও সরকার।

প্রধানমন্ত্রীর কাছে কয়েকটি প্রশ্ন রেখে রিজভী বলেন, ‘বিএনপি মহাসচিবের গাড়িবহরে হামলা করেছে কে? গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে আঘাত করে রক্তাক্ত করেছে কে? ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন ও রোমানা মাহমুদকে গুলি করেছে কে? হাবিবুর রহমান হাবিবকে আপনি ভালভাবেই চেনেন, তাকে হত্যা করার জন্য তার শরীরে ছুরি ঢুকিয়েছে কে?

মির্জা আব্বাস, আফরোজা আব্বাস, ড. মঈন খান, মওদুদ আহমদ, মেজর হাফিজ ও হাসিনা আহমেদের মিছিলে হামলা করেছে কে?

‘শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, হাফিজ ইব্রাহিম ও ডা. সানসিলা প্রিয়াংকার ওপর হামলা চালিয়েছে কে? সারাদেশে ধানের শীষের শতাধিক প্রার্থীর ওপর রক্তাক্ত হামলার ঘটনা ঘটেছে, কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে?’

তিনি আরও বলেন, এখনও বিভিন্ন স্থানে ধানের শীষের প্রার্থীরা তাদের নিজ নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ। গতকাল রাতে কিশোরগঞ্জে ধানের শীষের প্রার্থীর বাড়িতে বিএনপি নেতা শহীদুল ইসলাম শহীদকে হত্যা করেছে কে? যারা এসব সহিংস অপকর্মে লিপ্ত তাদেরকে কি শান্তির বার্তাবাহক বলতে হবে?

রিজভী আরও বলেন, ঢাকা-৪ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও আওয়ামী ক্যাডাররা তার বাসা ঘিরে রেখেছে। অথচ নৌকা মার্কার প্রার্থী সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা গণমিছিল করেছেন।

‘চাঁদপুর জেলা বিএনপির আহবায়ক ও ধানের শীষের প্রার্থী শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক নিজ বাড়িতে অবরুদ্ধ। গতরাত ৩টায় তার বাসায় র‌্যাব ঢুকে সবকিছু তছনছ করেছে। গতরাত দেড়টায় বরিশালের গৌরনদীতে ধানের শীষের প্রার্থী জহির উদ্দিন স্বপনকে তার বাড়িতে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।’

নির্বাচনে ভয়হীন পরিবেশ চায় জাতিসংঘ

নির্বাচনে ভয়ভীতি ও দমন-পীড়নহীন পরিবেশ নিশ্চিতের আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। নির্বাচন যাতে অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ, বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক হয় সেটিও নিশ্চিত করতে বলেছে বৈশ্বিক এ সংস্থাটি।

জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের পক্ষ থেকে বৃহস্পতিবার দেয়া এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানানো হয়। মহাসচিবের পক্ষে তার মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বিবৃতি দেন।

এতে জাতিসংঘ মহাসচিব শান্তিপূর্ণ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের প্রতি জাতিসংঘের সমর্থন অব্যাহত রাখার প্রতিশ্র“তি পুনর্ব্যক্ত করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘ মহাসচিব আসন্ন ৩০ ডিসেম্বর জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে, নির্বাচনকালে ও পরে সহিংসতামুক্ত, ভয়ভীতিহীন ও দমন-পীড়নহীন পরিবেশ নিশ্চিতের জন্য সব পক্ষের কাছে আহ্বান জানিয়েছেন।

নির্বাচন যাতে শান্তিপূর্ণ, বিশ্বাসযোগ্য ও অংশগ্রহণমূলক হয় সেটি নিশ্চিত করতে হবে। ভোটাধিকার প্রয়োগে সংখ্যালঘু, নারীসহ সব বাংলাদেশি নাগরিক যেন নিরাপদ বোধ করেন এবং আস্থা অনুভব করেন। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সুশীল সমাজ ও পর্যবেক্ষকেরা তাদের দায়িত্ব পালনে যাতে পূর্ণ সহায়তা পান।

এর আগে ২১ ডিসেম্বর নিয়মিত ব্রিফিংয়ে বাংলাদেশের নির্বাচনে বিরোধীদলীয় প্রার্থী ও তাদের সমর্থকদের ধরপাকড় নিয়ে জাতিসংঘের মূল্যায়ন জানতে চাওয়া হয়।
সাংবাদিকদের প্রশ্ন ছিল, ‘আপনি কি এখনও বিশ্বাস করেন, বাংলাদেশের আসন্ন নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হবে, যেখানে আইনের বিধিবিধানের কথা বলে বিরোধী প্রার্থীদের নির্বাচনে অংশগ্রহণের অযোগ্য ঘোষণা করা হচ্ছে?’

জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, ‘আমরা এসব ঘটনা নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছি। আমরা নির্বাচনী সহিংসতা ও বিরোধীদের গ্রেফতারের খবরে উদ্বিগ্ন।

অংশগ্রহণমূলক ও স্বচ্ছ নির্বাচনের জন্য সব পক্ষকে তাদের দায়িত্ব পালনের জন্য আহ্বান জানাই। এই পরিপ্রেক্ষিতে এটা অবশ্যই খুব গুরুত্বপূর্ণ যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সব প্রার্থীর অবাধ ও নির্বিঘ্নে প্রচারের পথ নিশ্চিত করবে।

বাংলাদেশের মানুষ নিরাপদে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের বিষয়ে যেন আস্থা বোধ করে। নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় সুশীল সমাজ ও পর্যবেক্ষকেরা তাদের দায়িত্ব পালনে যাতে পূর্ণ সহায়তা পান।’

দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।