ব্রেকিংঃ

একটি ঘরের আশায় প্রধানমন্ত্রী দিকে তাকিয়ে রাজাপুরের ভিক্ষুক দুলালের পরিবার

আকতারুল ইসলামঃ
একটি ঘরের আশায় বঙ্গবন্ধুর কন্যা বর্তমান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দিকে তাকিয়ে আছেন ভোলা সদর উপজেলার রাজাপুর ইউনিয়নের ভিক্ষুক দুলাল ও দুলালের পরিবারের।
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া হতদরিদ্রের জন্য দুই দুইবার সরকারি ঘরের জন্য নামের তালিকা দিয়েও আজ পর্যন্ত সরকারি ঘর থেকে বঞ্চিত ভোলার রাজাপুরের সেই দুলাল ভিক্ষুকেরর তাদের কপালে জুটলো না একটি হতদরিদ্রের ঘর।
রৌদ্র, বৃষ্টি, খদরা,ও বাতাসের মধ্যে দিয়েই দিন কাটছে অসহায় রাজাপুরের ভিক্ষুক দুলাল ও তার পরিবারের।  দুর্ভোগের শেষ নেই তাদের।

সাংবাদিকদের ক্যামেরার সামনে অশ্রুসিক্ত চোখে তিনি বলেন, ইলিশার নাদের মিয়ার হাটের উত্তরে হোসেন লার্ডের বাড়িতে ১৯৬৮ সালে আমার জন্ম। তখন আমাদের পরিবারটি ছিলো একেবারে হতদরিদ্র তাই শিক্ষার আলোর ছোঁয়া লাগেনি আমাদের পরিবারের কারো জীবনে। ধীরে ধীরে শৈশব, কিশোর জীবন কেটে এখন আমি বৃদ্ধের জীবনে আবদ্ধ হয়েছি। জন্মের ২০ বছর পর মেঘনা নদীর গর্ভে চলে যায় আমাদের বসতি স্থাপনটি। তখন আশ্রয়ের জায়গা হয় ভোলার রাজাপুরের ৮নং ওয়ার্ডে। এইখানেই বড় হয় আমার ২ মেয়ে ও ২ ছেলে। আমি তখন গাছ কাটার কাজ করতাম। আমার পরিবারটি দরিদ্র তাই অল্প শিক্ষায় শিক্ষিত করে বিয়ে দিয়ে দেই আমার অল্প বয়সের দুই মেয়েকে। ছেলে ২টার মধ্য বড় ছেলে লিঙ্গ প্রতিবন্ধী এবং ছোট ছেলে এবার স্থানীয় বিদ্যালয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ে। আজ ৯ বছর ধরে আমি প্যারালাইসেন্স রোগে আক্রান্ত। নিজস্ব যে সম্পদ ছিলো তা দিয়ে চিকিৎসা চালিয়েও সুস্থ হয়ে উঠতে পারিনি। এখন সব হাঁড়িয়ে জীবনের তাগিদে ভিক্ষা করে জীবন কাটাচ্ছি কোন মতে। বড় মেয়ের জামাই লজ্জা পাবে তাই সেই এলাকায় ভিক্ষা করিনা। আমার স্ত্রী ( বউ ) মানুষের বাসায় কাজ করে। প্রতিবন্ধী ছেলেটি মালের হাটের চায়ের দোকানে পানি টেনে জীবন চালায়। মাঝে মধ্য ভুলত্রুটি হলে দোকানদারও মারে। একটা টিনের চালায় মাথা গুঁজিয়ে বাঁচাচ্ছি জীবন। সকাল হলে আবার বেড়িয়ে যাই ভিক্ষার উদ্দেশ্যে।
সরকারি ঘর এসেছে শুনে গিয়েছি চেয়ারম্যানের কাছেও কিন্তু সেটা থেকেও বঞ্চিত হলাম। মেম্বার মিলন ঘরের জন্য দুইবার নাম নিয়েছে কিন্তু ঘর পায়নি। সমাজের নিম্ন শ্রেণীর মানুষকে কেউই মূল্য দেয়না। কথা বলতে বলতে এইখানেই এসে নীরব হয়ে যান ভিক্ষুক দুলাল। কাঁদতে থাকেন অঝর অশ্রু চোখে নিয়ে।

তাই জানতে চেয়েছিলাম তার স্ত্রী বিবি হাজেরার কাছে তিনি বলেন, কিছু আগে বিদেশে থাকা জাকির নামে এক ভাই কিছু টাকা দিয়েছে। দেশের মানুষের মায়া না থাকলেও বিদেশের মানুষের মায়া আছে। কি করবো জীবন তো চালাতে হবে তাই তো কাজ করছি মানুষের বাসায় চলছে জীবন চলবেই। আবেগে আবার বলে উঠলেন আমরা মানুষ না তাই আমাদের প্রতি কারোই মায়া হয়না।

তাদের এই সব কথা শুনে চলে আসার সময়, স্থানীয় প্রতিবেশিরা বলেন, সরকার এতো ঘর দেয় গরীব মানুষদেরকে এদের কে কি সরকারের চোখে পড়েনা। চেয়ারম্যানের কাছে কি এরা কখনো কোন কিছুর জন্য গিয়েছে? এই প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের উত্তর মিলে আর কত যাইবো যেতে যেতে এখন এরা ক্লান্ত ( হরান) হয়ে গেছে। তাই প্রতিবেশিসহ ভিক্ষুক দুলাল বলেন যদি পারেন তাহলে কইয়েন তোফায়েল সাহেব যে আমারে একটা ঘর দেয়। যেহেতু চেয়ারম্যানের কাছে ঘর পাই নাই। তাই এবার তোফায়েল আহমেদ এর কাছে একটা ঘর চাই।

দুই দুইবার ঘরের নাম দিয়েও কেনো ঘর পায়নি। এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান মিজান খাঁর সাথে যোগাযোগ করলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।