ব্রেকিংঃ

ভোলায় ছেলের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে মায়ের সংবাদ সম্মেলন

স্টাফ রিপোটার।। পৌরসভার, ৩নং ওয়ার্ডের, কালীবাড়ী রোড এলাকার বাসিন্দা ফরিদা ইয়াছমিন (৬০) তার প্রথম পুত্র মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়ে সন্তানের বিচারের দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেন মা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, তার স্বামী মৃতঃ মোঃ শাহজাহান, বিআরডিবির কর্মকর্তা ছিলেন। বিগত ২০১১ ইং সালে তিনি মারা যান। তার চার ছেলে। বড় ছেলের নাম মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান। সে ছোট বেলা থেকেেই উগ্র, উচ্ছৃঙ্খল ও বখাটে স্বভাবের ছিলো। সে তার মা, বাবা, অন্যান্য ভাইদের সাথে ও পাড়া প্রতিবেশিদের সাথে সর্বদা খারাপ আচরন করতো। মোটরসাইকেল, দামী মোবাইল ইত্যাদির জন্য প্রায়শই তার বাবা ও মায়ের সাথে ঝগড়া বিবাদে জড়াতো, এমন পরিস্থিতিতে তার বাবা তাকে ত্যাজ্যপুত্র করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং আত্নীয় স্বজনদের অনুরোধে তিনি তা না করে মৃত্যু বরণ করেন। অভিযুক্ত বড় ছেলে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান ২০০৭ সালে আলীনগরের বাসিন্দা মোঃ নাগর এর মেয়ে মুক্তা আক্তারকে বিবাহ করেন। ফরিদা ইয়াসমিন অভিযোগ করে বলেন, আমার স্বামীর মৃত্যুর পর আমার স্বামীর রেখে যাওয়া কালীবাড়ী রোডের ১১ শতাংশ জমিতে পাঁচতলা ভবন নির্মানের জন্য আমরা সিদ্ধন্ত গ্রহণ করি। টাকার প্রয়োজনে অন্যান্য জমি বিক্রির জন্য আমার বড় ছেলেকে দায়িত্ব দেই। সে প্রায় ১ কোটি টাকার সম্পত্তি বিক্রি করে আমাকে ৬০ লাখ টাকা দেয়। বাকি ৪০ লাখ টাকা আত্নসাৎ করে। পরে জানতে পারি সে টাকা আমার বড় ছেলে সুদের উপর লাগায় ও মাদকের ব্যবসা করে। আমার বড় ছেলে দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ আমার সাথে ও আমার অন্যান্য ছেলেদের সাথে কথা বলে না। তবে প্রতিদিনই আমাদেরকে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজ হুমকি—ধামকি এমনকি আমাদেরকে আমার স্বামীর বাড়ি থেকে উচ্ছেদের পায়তারা করে আসছে। সন্তান হিসাবে সে মা, বাবার কোন দায়িত্ব কিংবা ভরন পোষনের দায়িত্ব কখনো পালন করেনি। আমাদের বসত বাড়ি নির্মাণের সকল খরচ আমার বড় ছেলে মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান নিজ হাতে খরচ করেছে। সেখান থেকেও সে মোটা অংকের টাকা আত্নসাৎ করে। ভবন নির্মানের পর উক্ত ভবনে উঠে এবং আমাকে ও অন্য তিন ভাইকে তার বাবার সম্পত্তি থেকে বেদখল ও বঞ্চিত করার যড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তাকে তার বাবার ওয়ারিশ সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি ভাগ বাটোয়ারা করে নেওয়ার প্রস্তাব দেয়া হলে সে তার বাবার পুরো সম্পত্তি এবং আমার বাবার বাড়ি থেকে প্রাপ্ত সম্পত্তি একা তার নামে লিখে দেওয়ার দাবী করে। তার এ অযৌক্তিক দাবী না মানলে সে আমাকেসহ আমার অন্যান্য সন্তানদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমার বড় ছেলে শালিশ বিচার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ আল্লাহ খোদা কাউকে মানে না। আমার বড় ছেলে কোন কাজ কর্ম করে না, সে আমার স্বামীর ও আমার অর্থ সম্পদ আত্বসাৎ করে সুদে ও মাদক কারবারি করে অর্থ উপার্জন করে। আমার ছেলে বিয়ে করার পর তার স্ত্রী মুক্তা আক্তার ও শ^শুর মোঃ নাগরের সহযোগীতায় তার শক্তি আরো বেড়ে যায়। আমার ছেলের স্ত্রী মুক্তা আক্তার আমাকে ও আমার তিন সন্তানকে হয়রানি ও ক্ষতিগ্রস্থ করার জন্য একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়েই যাচ্ছে। জানতে পারি আমার ছেলের শ^শুর মোঃ নাগর (সাবেক মোম্বার) আলীনগর এর ইন্দনে ও উস্কানিতে এমন অপকর্ম করছে। আমার বড় ছেলে ও তার স্ত্রী আমাকে ও আমার বাকি তিন ছেলেকে মারধর করে আমাদের বিল্ডিং ঘর থেকে বের করে দেয়ার জন্য কয়েক দফা চেষ্টা চালায়। আমার বড় ছেলে ও তার স্ত্রীর অত্যাচারে আমরা অতিষ্ট। আমরা দেশের নাগরিক ও ভোলা পৌরসভার বাসিন্দা হয়েও স্বাভাবিক চলাফেরা করতে পারছি না। সংবাদ সম্মেলনে আবেগতারিত হয়ে ফরিদা ইয়াসমিন উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, একজন মা কখন তার সন্তানের বিরুদ্ধে কথা বলে? সন্তান যখন তিলে তিলে মাকে যন্ত্রণা দিয়ে অতিষ্ট করে ফেলে মাকে মারধর করে, মেরে ফেলার হুমকি দেয় তখন আর মায়ের কিছু করার থাকে না। তিনি সংবাদকর্মীদের মাধ্যমে ভোলার অভিভাবক সাবেক মন্ত্রী তোফায়েল আহম্মেদ এর দৃষ্টি আকর্ষন করেন, তিনি বলেন আমার এই সন্তান ও তার স্ত্রীর অত্যাচারের হাত থেকে আমাকেসহ আমার তিন সন্তানকে বাঁচান। ভোলার জেলা প্রশাসকের নিকট ও জেলার পুলিশ সুপারের নিকট তিনি সুষ্ঠু বিচার চান। ভোলা পৌরসভার মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানের নিকট তিনি দাবী করেন যেন তার স্বামীর ভবনে সুস্থ্য সুন্দর ভাবে থাকার ব্যবস্থা করেন। দৈনিক ভোলা টাইমস্ পত্রিকার নিজস্ব কার্যালয়ে গত কাল বুধবার সন্ধ্যায় এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় ভোলায় কর্মরত বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দগন উপস্থিত ছিলেন।

দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।