ব্রেকিংঃ

ঢাবিতে তিন জাতীয় অধ্যাপককে সংবর্ধনা

নতুন নিয়োগ পাওয়া তিন জাতীয় অধ্যাপককে সংবর্ধনা দিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ও ঢাকা ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন। তারা হলেন-অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম. অধ্যাপক আনিসুজ্জামান ও অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরী। শনিবার বিকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবনে এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে তাদেরকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এ তিন অধ্যাপক জাতির বাতিঘর। তারা নিজ কর্মের আলোকে জাতিকে আলোকিত করে তুলেছেন। তারা কর্মবীর। এই তিন বরেণ্য ব্যক্তি কেবল শিক্ষার্থীদের শিক্ষক নন, তারা শিক্ষকদেরও শিক্ষক, মানবতারও শিক্ষক। তারা সুস্থ ও সবল থেকে আরও বহুদিন পর্যন্ত জাতিকে আলোক বিলিয়ে যাবেন বলে সকলের প্রত্যাশা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই এসোসিয়েশেনের সভাপতি এ. কে. আজাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। সম্মানিত অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. নাসরীন আহমাদ ও উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সামাদ। স্বাগত বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল।

রবীন্দ্র ও নজরুল সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠান শুরু হয়। চার পবিত্র ধর্মগ্রন্থ থেকেও পাঠ করা হয়। জাতীয় অধ্যাপকদের ফুল দিয়ে বরণ করে নেওয়া হয়। পরে তিন জাতীয় অধ্যাপকের নামে মানপত্র পাঠ করা হয়। শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের সভাপতি তা তাদের হাতে তুলে দেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম ও অ্যালামনাই এসোসিয়েশনের মহাসচিব রঞ্জন কর্মকার।

সংবর্ধনার জবাবে জাতীয় অধ্যাপকরা তাদের স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন। অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, জাতীয় অধ্যাপকের যে সম্মান আমাকে দেওয়া হয়েছে, আমি তাতে ধন্য মনে করছি। এর যোগ্য কিনা, জানি না। ভালোবাসার দৃষ্টিতে দেখলে সামান্য জিনিসও অসামান্য হয়ে ওঠে। আমি আমার বাকি জীবন যেন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও গবেষণামূলক কাজে যেন জড়িত থাকতে পারি।’

অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম বলেন,‘ছাত্র হবার আগে থেকেই ১৯৪৩ সাল থেকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার সঙ্গে আমার যোগাযোগ। ৫০’ সালে ছাত্র হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসি। এ বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার নানা স্মৃতি। আমি ধন্য যে, বাংলা বিভাগের দুজন শিক্ষক একসঙ্গে এবার জাতীয় অধ্যাপকের মর্যাদা পেয়েছেন।

অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী বলেন, ‘আমার আইএসসি এবং বিএসসি ফার্স্ট পার্ট পরীক্ষার সনদপত্র ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর ও রেজিস্ট্রারের সই করা। তাই এ বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাই হিসেবে নিজেকে দাবি করতে পারি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক অত্যন্ত ওতপ্রোতভাবে ঘনিষ্ঠ। পদ্মা সেতু, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ সরকারের বিভিন্ন বড় প্রকল্পে নিজের সম্পৃক্ততার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যে এগুলো আলোর মুখ দেখবে।’ তিনি জানান, দেশের জাতীয় অধ্যাপকদের মধ্যে তিনিই একমাত্র প্রকৌশল শিক্ষা থেকে এসেছেন। আগের ২২ জনের কেউ প্রকৌশলী ছিলেন না।’ এ সময় সকলে করতালি দিয়ে তাকে অভিনন্দন জানান।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, এই তিন অধ্যাপকের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান জাতীয় সংবর্ধনায় পরিণত হয়েছে। এই তিন কৃতী ব্যক্তির কারণে দেশ অনেক উপকৃত হয়েছে। তারা জাতির বাতিঘর। জাতিকে আলোক নির্দেশনা দেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত জানান, তার সৌভাগ্য তিনি জাতীয় অধ্যাপক নির্বাচন কমিটির প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন। নিজের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে তিনি এই কমিটির প্রধান। এর চেয়ে ভালো মনোনয়ন এর আগে আর দিতে পারেননি। এই তিনজনের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে মাত্র কয়েক সেকেন্ড সময় লেগেছে।

অনুষ্ঠানের সভাপতির বক্তব্যে অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ. কে. আজাদ বলেন, ‘এই তিন গুণী অধ্যাপককে সম্মান দিতে পেরে আমরা নিজেরাই সম্মানিত। সারাদেশের কাছে তারা আদর্শ।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ এস এম মাকসুদ কামাল বলেন, ‘এই তিনজন ব্যক্তি শিক্ষার্থীদের শিক্ষক, শিক্ষকদের শিক্ষক, মানবতার শিক্ষক। তারা অসাম্প্রদায়িক চেতনা ও মানবতার পতাকা যে বহন করে চলেছেন তা অব্যাহত থাকুক

দুঃখিত! কপি/পেস্ট করা থেকে বিরত থাকুন।